SI Saiful ভাই এর রেফরেন্সে দক্ষিণখান থানায় এক সপ্তাহ রাতের কাজ পেয়েছিলাম। রাতের কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার অনেক পুরোনো। ২০০৫ সাল থেকে আমি রাতে পড়ি দিনে ঘুমাই। এর পর উচ্চশিক্ষা গ্রহন কালে ক্লাস আর পড়াশুনা না হবার কারনে ফ্যক্টরীতে রাতের কাজ বেছে নিয়ে তাতেই অভিজ্ঞতার ঝুড়ি ভরেছি। সুতরাং কাজ আর রাতের কাজ কোনটাই আমার কাছে কঠিন কিছু না। শুধু উচ্চশিক্ষা নিতে পারছি কম এই যা। ফ্যক্টরীতে কাজ করা সময় কিছুটা রিলাক্সে থাকতাম। এবং একটা সময় ফ্যক্টরীর চাকায় শব্দ কমে যেত। সে যাই হোক থানায় এমনটা হয় ভাবছিলাম। মোটেই না, এখানে দিন রাত ২৪ ঘন্ট ওয়্যারলেস বাজতেই থাকে। বিভিন্ন লোকেশনে পুলিশ অফিসারের ম্যাসেজ সেখানে আসে আর থানা থেকে সেগুলো রিসিভ করা হয়।
রাত ১০ টায় আসতে বললেও আমি ৯ টায় আসতাম এসে যেমন কর্মচঞ্চল দেখতাম, কাজের মধ্যে বিরতি নিয়ে উঠলে প্রতিটা অফিসারদের একইরকম ব্যাস্ততার দেখতাম। শুধু জনসাধরণ নেই তবে উনাদের কাজের শেষ নেই। রাতের কিছুটা সময় খাবারের বিরতি তাতেও একহাতে কাজ অন্য হাতে খাওয়া, আমরা অথিতি তাই খাবারে ভিন্ন আয়োজন এবং রিলাক্সে খাবারের সর্বচ্চ ব্যবস্থা করতে চেয়েছেন তারা। যা ছিল তাতেই লজ্জাবোধ করছিলাম, এতটা মোটেই প্রয়োজন ছিলানা। কাজের প্রেশার অনেক তবে আমাদের উপর খুবই কম। আমাদের একবারই বলা হয়েছে “আপনার এন্ট্রিবেজ পেমেন্ট আর প্রেসার আমাদের, প্রেসার নিয়ে মোটেই কাজ করবেন না, খারাপ লাগলে হেটে আসেন, চা নিয়ে আসেন, বিল দিবেন না, সকালে আমরা বিল দিব….।”
এতটা রিলাক্সে থাকার কারনে তাদের ব্যাস্ততা দেখতে পেয়েছিলাম। সকাল হলেও যে কাজের প্রেসার কমবে তা নয় মোটেই, এখন আমজনতা তাদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আসবেন এবং তা অফিসারদের বলার জন্য মোটেই প্রস্তুতি নিয়ে আসবে না কেউ। প্রতিটা পুলিশ অফিসার অফিসার ১০টা কথা শুনে বুঝতে পারেন তার জিডি করতে হবে। অথচ জিডি করার জন্য হানতামের মোটেই দরকার নাই, সে সাদা কাগজে লিখে আনলেই পারতো। এমন কাজ করার জন্য দেখা গেল সে আরো ৫জনকে নিয়ে আসছে যারা কেউ সঠিক কিছুই জানে না। মারামারি করে মাথা ফাটছে আগে থানা!! থানায় কি ডাক্তার থাকে!! মানে থানার অফিসারদের যে কাজ তার চেয়ে বিরক্তির কাজ বেশি করতে হয়। এত কাজ করে যে মাথা ঠান্ডা রাখে এই পারে কে। যাই হোক রাতে কাজ আর দিনের কাজ অনেক পার্থক্য। লোকজনের চিল্লাফাল্লা মোটেই সহ্য হচ্ছে না। কাজ বুঝিয়ে চলে আসলাম।
এভাবে সাতরাত কাটলো তাদের সাথে।