প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে যেসকল বিষয়ে খোজ নিয়ে ভর্তি হবেন এবং যেভাবে খোজ খবর নিবেন তার তা আলোচনা করা যাক।
১.১. টিউশন ফি: ভর্তির সময় যে ওয়েভার দেয়া হয় এবং কোর্স শেষ করতে যে টিউশন ফি বলা হয় তা কি ফিক্সড কি/না। দেখা গেল আপনি ৫০% বা তার বেশি ওয়েভারে ভর্তি হলেন কিন্তু ক’দিন পরে আর ওয়েভার নাই, এমন যেন না হয় এটা কনফার্ম হয়ে নিবেন। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে অনেক বেশি ওয়েভারে ভর্তি করাবে তবে তাদের কিছু হিডেন পলিসি থাকে সেগুলো পূরণ না হলে ওয়েভার ক্যান্সেল হয়ে যায়। হিডেন পলিসি এর ভিতর অনেক কিছু থাকতে পারে যেমন: নির্দিষ্ট রেজাল্ট থাকতে হবে প্রতি সেমিষ্টারে রেজাল্ট খারাপ হলে ওয়েভার ক্যান্সেল। (জানা যাবে ভর্তি বিভাগ ও তথ্য বিভাগ থেকে)
১.২. রিটেক/রিকোর্স/মেকআপ: রিটেক/রিকোর্স/ মেকআপ এর ফি কত হবে এটা ভর্তির সময় জেনে নিবেন। রিটেক রিকোর্স মেকআপ এর মত ঝামেলায় না জড়ানোই ভালো। প্রাইভেট ভার্সিটিতে এত টাকা খরচ করে সময় নষ্ট করার কোন মানেই হয় না। চার বছর টানা পড়ে শেষ করে দিবেন এরপর জব মার্কেটে চলে যাবেন। যদিও কোন কারণে রিটেক বা অন্যান্য যদি কিছু করা লাগে সেগুলো আগে থেকে জেনে নিবেন। (জানা যাবে ভর্তি বিভাগ ও তথ্য বিভাগ থেকে)
২. ভাইস-চ্যান্সেলর: ভাইস-চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত কি/না এবং মেয়াদ আছে কি/না সেটি দেখে ভর্তি হবেন, ভাইস-চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত হলে সে ভার্সিটি বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হয় সঙ্গে এর ছাত্র-ছাত্রীরাও সুবিধাপ্রাপ্ত হন। ভাইস-চ্যান্সেলর ছাড়াও রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর/ ট্রেজারার থাকলেও ভর্তি হতে পারেন। ভাইস-চ্যান্সেলর, প্রো-ভাইস-চ্যান্সেল বা ট্রেজারার এর একটি পদেও যদি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত কেউ না থাকে সেক্ষেত্রে ভর্তি হওয়াটা বিপজ্জনক। কারণ এসব ভার্সিটিতে পড়াশোনার কোন মান রক্ষা করা হয় কি/না তা জানা যায় না। সেচ্ছাচারিতা বজায় থাকে, ছাত্র-ছাত্রীদের কল্যানে তেমন কিছুই করা হয় ন। টিউশন ফি নিয়ে যাচ্ছে তাই হয়। (জানা যাবে http://www.ugc-universities.gov.bd/private-universities থেকে )
৩. ওয়েবসাইট: ওয়েবসাইটে ভিজিট করলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি এবং সেবাদানের ব্যবস্থা বুঝতে পারবেন। ওয়েবসাইট লোড হতে বেশি সময়, পর্যাপ্ত তথ্যের অভাব থাকলে সেখানে ভর্তি না হওয়টাই ভালো।
৪. পরিবহন ব্যবস্থা: সকল বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সব রুটে সার্ভিস দিতে পারে না, তবে ছাত্র-ছাত্রীদের কথা বিবেচনায় রেখে সর্বোচ্চ বাস প্রদানের নিশ্চয়তা প্রদান করে। তাই আপনার বাসস্থানের আশে পাশে বা আপনার রুটে কোন বাস আছে তা দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন। (বিস্তারিত জানা যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বিভাগে থেকে)
৫.১. ডিপার্টমেন্ট হেড ও ডীন: ডিপার্টমেন্ট হেড এর নাম, তিনি কতদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে হেড এর দায়ীত্বে আছেন। ডিপার্টমেন্ট হেড কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছিলেন এবং তার কর্মজীবন। একই সাথে ডীন এর একাডেমিক এবং ওয়ার্কিং ডিটেইলস দেখতে পারেন। ( জানা যাবে ডিপার্টমেন্ট ও তথ্য বিভাগ থেকে)
৫.২. প্রফেসর: ডিপার্টমেন্টে কতজন প্রফেসর পূর্ণকালীন এবং কতজন খন্ডকালীন আছেন তা জেনে নিন, প্রফেসর নাই এমন ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হলে অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হবেন।
৬. শিক্ষক: পূর্ণকালীন ও খন্ডকালীন শিক্ষক কতজন আছেন এ বিষয়ে দেখবেন। পূর্ণকালীন শিক্ষকের থেকে খন্ডকালীন শিক্ষক বেশি থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে সাবধানতা অবলম্বন করবেন। সাধারণত খন্ডকালীন শিক্ষক এর সংখ্যা পূর্ণকালীন শিক্ষকের অর্ধেক এর কম হয় (ডিপার্টমেন্ট ও ওয়েব সাইট)
৭. গেস্ট টিচার: গেস্ট টিচার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি যে বিভাগে ভর্তি হতে চাচ্ছেন সেখানে দক্ষ শিক্ষকের পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়ে কোন শিক্ষকদের এনে বিশেষ কোন লেকচারের ব্যবস্থা করা হয় কি/না সেটা খবর নিবেন। (ডিপার্টমেন্ট)
৮. পেমেন্ট ম্যাথড: বিশ্ববিদ্যালয়ে পেমেন্ট সিস্টেম কতটা সহজ সেটা দেখার বিষয়। যদি পেমেন্ট ম্যাথড শুধু একটি মাত্র ব্যাংক এর শাখা হয় বা শুধু অফলাইনেই পে করা যাবে এমন হয় তবে সেখানে পেমেন্ট নিয়ে অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে। তাই অনলাইন পেমেন্ট + মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পেমেন্ট করা যায় কি/না সেটা দেখে ভর্তি হতে পারেন। বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাংক বুথ থাকে। ( জানা যাবে তথ্য ও ভর্তি বিভাগ)
৯. ক্রেডিট ট্রান্সফার: ক্রেডিট ট্রান্সফার করে ভর্তি হওয়া যায় কি/না তার খোঁজ নেয়া। ক্রেডিট ট্রান্সফার করে ভর্তি হবার ব্যবস্থা না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় দক্ষ না। (জানা যাবে ভর্তি তথ্য বিভাগ)
১০. MOI: অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়াম ওব ইন্সটাশন সার্টিফিকেট আইএলটিএস এর সমমানের হয়, একই সাথে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের MOI এর কোন মানই থাকে না। তাই এই বিষয়ে আপনার পরিচিত এবং বাহিরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি শর্ত দেখে নিতে পারেন। বাহিরের যেসব বিশ্ববিদ্যালয় MOI সার্টিফিকেট গ্রহণ করে তারা কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের লিস্ট দেয়, উক্ত লিস্টেড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলে আলাদা করে আইএলটিএস সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে না।
১১. রেড লিস্টেড কি/না: বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যার জন্য ইউজিসি তাদের ওয়েবসাইটে নামের পাশে লাল তারা দিয়ে রাখে এবং সমস্যার কথা নিচের দিকে বিস্তারিত উল্লেখ করে। সেগুলো দেখে ভর্তি হবেন ( জানা যাবে পাশের লিংকে http://www.ugc-universities.gov.bd/private-universities)
উপরোক্ত তথ্য ছাড়াও আরো কোন তথ্য পেতে কমেন্ট করতে পারেন কমেন্ট বক্সে।
ধন্যবাদ।।