আমার মামারা

ছোট বেলায় আরএফএল এর একটি বিজ্ঞাপনে দেখতাম ভাগিনারা মামার প্রতি কেমন দূর্বল এবং মামারা কত আন্তরিক। সে থেকেই মামাদের প্রতি আমার প্রচন্ড আগ্রহ তৈরী হয়েছিল। ছোট বেলায় ঢাকা থেকে অনেক দূরের মফস্বলে বড় হয়েছি এবং মামারা সবাই ঢাকা শহরে থাকতো তাই তাদের দেখা মেলা বড় কষ্টের ছিল। যখন বুঝতাম মামারা অনেক আন্তরিক তখন থেকে তাদের দেখা আমি পেতাম না। তাই অনেক আগ্রহ নিয়ে থাকতাম কবে তাদের সাথে দেখা হবে। মায়ের মুখে সব মামাদের গল্প শুনতাম কে কেমন। মামাদের ভিতর একজন মামা ছিলেন যিনি আমাদের জন্মের অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। তিনি অনেক আন্তরিক ছিলেন যেনে তাকে না পেয়ে নিজেকে দূর্ভাগা মনে করতাম। মামারা কত আন্তরিক তা দেখার জন্য অধির আগ্রহ নিয়ে থাকতে থাকতে এমন একদিন আসলো যেদিন আমি মামাদের দেখা পাব। সেদিন ঢাকার উদ্যেশে রওনা দিলাম আর মামাদের নিয়ে আমার স্বপ্নের বিভিন্ন কথা সাজাতে লাগলাম। সেদিন আমার মেঝ মামার সাথে দেখা হবে আর তার সম্পর্কে বিভিন্ন কথা শুনতে লাগলাম,তিনি অনেক শক্তিশালী, অনেক মানবিক, অনেক জ্ঞানী তাই তাকে দেখার আগ্রহ তো ছোট বেলা থেকেই। রাতে মামার বাসায় পৌছে দেখি মাম অফিসের কাজে বাহিরে এবং পরেরদিন দুপুরে বাসায় আসবে। যাক মামার দেখা পেতে আর একটু মাত্র অপেক্ষা। তার গুনগান পুরো বাড়ী জুরে আর আমার অন্তরে তার ভালোবাসা পাবার শূন্যস্থান। অবশেষে মামা আসলেন আমার সাথে পরিচয় হবার সময় তার ছিলো না আসার সঙ্গে সঙ্গে অন্য ভাগীনা-ভাগ্নীরা তাকে ঘিরে ধরল বিভিন্ন কথা আর গল্পে ভরে উঠল সে রুম। আমি একটু দূরে থেকে সব খেয়াল করছিলাম এমন সময় আমার বোনেরা তার নিটকবর্তী হল এবং মামার সাথে গল্পে মজে উঠল। মামার সাথে আমার এখনো দেখা হয়নি কারণ আমি তাকে দেখেছি সেও দেখেছে কিন্তু কথা হয় নি। আমার বোনেরা মামার সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে বলে ডাকল আমি গেলাম এবং লজ্জায় তার সাথে কথা বলতে পারলাম না। বোনেরা শুধু আমায় তাদের ভাই এবং তাদের আমি আঘাত করি তা বলে পরিচয় করিয় দিল। মামার সহানুভুতির বদলে আমি পেলাম কড়া  শাসন!! যেটি ছিল আদর সোহাগ না করে, না যেনে শাসন করা। আমার ভিতর সাজানো সব মামারা আবসান হয়ে গেল। মেজাজ এত গরম হল তাও ভিতরে ভিতরে আর দেখা করলাম না ব্যাক্তিটির সাথে বাবা-মা কে বলে দ্রুত চলে আসার বায়ান করে রাখলাম আর যে কয়টা দিন থাকলাম মনে হচ্ছিল কোন এক যন্ত্রনাদায়ক গৃহে আছি।

বড় মামা: আমি আমার মত। মেজাজ খিটখিটে, অল্পতেই রেগে যাই। বড় মামার দেখা মেঝ মামার পরে পেয়েছি। তার সাথে কোন পরিচয় পর্ব হয় নি। তিনি মহা ব্যস্ত একজন। তাই আমি ঘুম থেকে ওঠার আগে তিনি অফিসে আর আমি ঘুমানোর পর তিনি বাসায়। এর ভিতর আমার পরিচয় হয় আমার ঘুমের ভিতর আমি কেমন তা আমার মা-বাবা-মামী-বোনদের রিপোর্টের ভিত্তিতে। ফলাফল তিনি আমায় বেয়াদব বললেন জানলাম একদিন মায়ের মুখে। আর মামাদের উপর ভরসা উঠে গেল।

ছোট মামা: তিনি ছোট হলেও অন্যান্য মামাদের থেকে ভিন্ন তেমন কিছুই ছিলেন না। ফলাফল তার থেকে দূরে থাকাটাকেই আমি নিজেকে সুরক্ষিত মনে করি।

মামাদের এমন অবজ্ঞতার কারণ এখন যা বুঝতে পারি তা হল বাবার সীমিত আয়। পরিবারের আয়র উপর নির্ভর আত্ত্বিয়দের ভালোবাসা।

Leave a Comment

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.

Welcome...
Have you faced any kind of problem, just comment.

কোন সমস্যা মনে হলে ইমেইল এড্রেস সহ কমেন্ট করুন, আপনার ইমেইল এড্রেস এবং সমস্যার গোপনীয়তা রক্ষা করা হবে।